1. rkarimlalmonirhat@gmail.com : Rezaul Karim Manik : Rezaul Karim Manik
  2. maniklalrangpur@gmail.com : রংপুর সংবাদ : রংপুর সংবাদ
নবান্ন উৎসবের আমেজে নতুন ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত তিস্তা চরাঞ্চলের কৃষক - রংপুর সংবাদ
রবিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৫, ০২:০৯ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
টানা ছয় দিন ধরে বন্ধ বুড়িমারী-লালমনিরহাট ট্রেন চলাচল টোল চাওয়ার চাওয়ার অজুহাতে অনৈতিক আচরণ, ১৫ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ  ভারতীয় সেনাদের লক্ষ্য করে পাক সেনাদের মুহুর্মুহু গুলি বর্ষণ রংপুরে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে শিশু হত্যা, প্রধান আসামিসহ গ্রেফতার ৬ ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে সরকারকে ব্যর্থ করার ষড়যন্ত্র চালাচ্ছে’ সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে মেধাসম্পদের সর্বোত্তম ব্যবহারে উদ্যোগী হতে হবে’ জুমার দিন যে আট আমল করবেন আকাশসীমা বন্ধ করেছে পাকিস্তান, যে পরিস্থিতিতে পড়ছে ভারত একজন পাকিস্তানিরও ক্ষতি হলে ভারতকে পরিণাম ভোগ করতে হবে’ তারেক রহমানকে দেশে না আনার চক্রান্ত চলছে : ফারুক

নবান্ন উৎসবের আমেজে নতুন ধান কাটা ও মাড়াইয়ে ব্যস্ত তিস্তা চরাঞ্চলের কৃষক

ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় : সোমবার, ৪ নভেম্বর, ২০২৪
  • ৫৪ জন নিউজটি পড়েছেন

মাহির খান:
উত্তরের জেলা লালমনিরহাটের তিস্তার চরগুলোতে ‘মঙ্গা তাড়ানো আগাম জাতের ধান’ কাটা- মাড়াই শুরু হয়েছে। কিষান কৃষাণিরা তাই ব্যস্ত সময় পার করছেন ধান কাটা ও মাড়াইয়ের কাজে। আগাম নতুন ফসল ঘরে তুলতে সীমাহীন আনন্দে চরের চাষিরা। অনেকে বাড়িতে করছে নবান্ন উৎসব। চলতি বছর কয়েকবার আকস্মিক স্বল্প মেয়াদি বন্যায় সেচ ছাড়াই চরাঞ্চলে আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে।

কৃষকরা জানায়, তিস্তার চরে প্রতিবছর বন্যায় আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হলেও এ বছর তেমন কোনো ক্ষতি করতে পারেনি সর্বনাশী তিস্তা। চলতি মৌসুমে গত বছরের তুলনায় ফসল কম হলেও ধানের বর্তমান বাজার দরে সন্তুষ্ট চাষিরা। চলতি বছর দোন (২৭ শতক) প্রতি ১২ থেকে ১৪ মণ করে আমন ধান পেয়েছে। প্রতি মণ ধানের বাজার মূল্য ১২’শ থেকে ১৩’শ ৫০ টাকা। এ বছর সার, কীটনাশক, ডিজেলসহ কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধি তাই আমন ধান উৎপাদনে খরচ বেশি। তবে বর্তমান ধানের বাজার মূল্য বেশি হওয়ায় লাভের আশা চাষিদের।

হাতীবান্ধা উপজেলার চর-গড্ডিমারী গিয়ে দেখা গেছে, প্রচণ্ড রোদে তিস্তার চরে কৃষকেরা আমন ধান কাটছেন। অনেকে কাটা ধান ঘরে তুলতে নৌকা দিয়ে পার করছেন। আবার কেউ কেউ বালু চরের মধ্যেই ধান মাড়াই করে বস্তায় ভরছেন। তবে বেশিরভাগ কৃষকের বাড়ি নদীর তীরবর্তী এলাকায় হওয়ায় নৌকা দিয়ে নদী পার করছেন। চরাঞ্চলে আগাম আমন ধান কাটা মানেই কৃষকের মনে উৎসবের আমেজ বিরাজ করে।

দেশের উত্তরাঞ্চলে প্রতিবারই বছর শেষে কৃষক ও দিনমজুর পরিবারে খাদ্য সংকট দেখা দিত। সেই সংকট কাটিয়ে ওঠার জন্য এই প্রচেষ্টা, আগাম জাতের ধানের চাষাবাদ। এই ধানচাষ শুরু হওয়ার পর এখন আর সেই সংকট নেই। অধিকাংশ কৃষক পরিবারের ওঠোনই এখন নতুন ধান ও খড়ে পরিপূর্ণ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, এ বছর জেলা সদরসহ আদিতমারী, কালীগঞ্জ, হাতীবান্ধা ও পাটগ্রাম উপজেলায় ১৬ হাজার ৫০৭ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের ধান চাষাবাদ হয়েছে। ব্রি ধান-৩৩, ৩৯, ৭১, ৭২, ৯০ ও ৯৫, ব্রি হাইব্রিড ধান-৪ ও ৬, বিনা ধান-৭, ১১, ১৬, ১৭ ও ২২, চায়না, পারিজা, ধানীগোল্ড, টিয়া, ময়না, ইস্পাহানি-২, হিরা-৫, এসিআই-২, অ্যারাইজ এজেড-৭০০৬ এবং অ্যারাইজ এইচএন-৯০১৯ সহ বিভিন্ন জাতের আগাম জাতের ধানের চাষ করেছেন কৃষকরা। সেসব ধান এখন পরিপূর্ণ হয়ে পেকে গেছে।

হাতীবান্ধা উপজেলার সিঙ্গিমারী এলাকায় আগাম জাতের ধান মাড়াইয়ের কাজ করছিলেন হাশেম মিয়া, মোকছেদুল হক ও বক্কর মিয়া সহ কয়েকজন কৃষক। তারা জানান, একসময় এ অঞ্চলে খুবই মঙ্গা ছিল। মানুষ কাউন ও গমের ভাত খেত। কিন্তু ১০-১২ বছর ধরে এ অঞ্চলে আগাম জাতের ধান চাষাবাদ হওয়ায় মঙ্গা দূর হয়েছে। অন্য ধানের চেয়ে এক মাস আগেই আগাম জাতের ধান পাকে। তাই এই ধান্যক মঙ্গা তাড়ানো ধান হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে।

কালীগঞ্জের তিস্তার চরের কৃষক মানিক মিয়া বলেন, এই মঙ্গা তাড়ানো ধানের চেয়ে খড়ের চাহিদা ও মুনাফা বেশি। প্রতি বছরই ছোট-বড় খামারিদের মাঝে গরুর খাদ্য হিসেবে খড় সংকট দেখা দেয়। সেই সংকট পূরণে আগাম জাতের ধান কেটে মাড়াই করে দিচ্ছেন স্থানীয় কৃষি শ্রমিকরা। বিঘাপ্রতি ১০-১২ মণ ধান হলেও প্রতি আঁটি খড় পাঁচ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে, যা গো-খাদ্য হিসেবে বেশ চাহিদা এ অঞ্চলে।

আরেক কৃষক রহিম উদ্দিন বলেন, এ বছর খরার কারণে আগের তুলনায় ধান কম হয়েছে। তারপরেও দোন প্রতি ১২/১৪ মণ করে ধান হবে। এখন বাজারে ধানের দাম বেশি তাই লোকসান হওয়ার শঙ্কা নেই।

হাতীবান্ধা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সুমন মিয়া বলেন, এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চরাঞ্চলের আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। ধানের বর্তমান বাজার মূল্য ভালো, কৃষকেরা এবার মোটামুটি লাভবান হবেন। চলতি মৌসুমে চরাঞ্চলে ২ হাজার ৩’শ ৫০ হেক্টর জমিতে আমন ধান চাষ হয়েছে।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. সাইখুল আরিফিন বলেন, চলতি মৌসুমে এ জেলার পাঁচটি উপজেলায় আগাম ধানের চাষ হচ্ছে। এসব জমির ধান কেটে আবারো ধান রোপণ করা যায় অথবা অন্য কোনো ফসল ফলানো যায়। তাই ইতোমধ্যে এই জাতের ধানের রোপণ বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।

আপনার সোস্যাল মিডিয়ায় শেয়ার দিন

Leave a Reply

এই ক্যাটাগরীর আরো সংবাদ

© ২০২৪ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | রংপুর সংবাদ.কম
Theme Customization By NewsSun